ঢাকা ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যমুনার বুকে সবুজ বর্ণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ১৭৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যমুনা নদীতে জেগে উঠেছে অনেক চর। কোন কোন চর স্থায়ী রূপ নিয়েছে। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার যমুনা পাড়ের প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা মানুষগুলো এ বালুচরেই নানা জাতের ফসল চাষ করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বোনে। ক্রমেই তারা পাল্টে দিচ্ছে যমুনা পাড়ের চিরচেনা চিত্র। যমুনার বুকে বালুচরেই মাঠের পর মাঠ সেজেছে সবুজ বর্ণে। এ সত্যিই এক কৃষি বিপ্লব।

চরে রবি ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি না ওঠায় চরে চাষিরা স্থায়ী বসতি গড়ে তুলেছে। দুর্গম চরে কিছুদিন আগেও যেখানে মানুষ ছিল না, এখন সেখানে প্রাণের উচ্ছ্বাস। ধু-ধু বালুচর পরিণত হয়েছে আবাদি জমিতে। শ্যালো মেশিন ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে সেচ দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেই বালুচরে চাষ হচ্ছে ভুট্টা, গম, জব, চিনা, কাউন, কালিজিরা, কুমড়া, লাউ, টমেটো, মুলা, আলু, পালংশাক, লালশাক, বেগুন, পেঁয়াজ, মরিচ, শিম, করলা, গাজর, ধনিয়া ও বিভিন্ন ফসল।

গাড়ামারা চরের কৃষক নুরুল ইসলাম জানালেন, তিনি গত বছর এক একর জমি থেকে ১২০ মণ ভুট্টা ঘরে তোলেন। এবারও তিনি ওই জমিতে বাম্পার ফলনের আশা করছেন। প্রায় ৩০ বছর আগে তাদের পূর্বপুরুষের ভেঙে যাওয়া জমিতে গড়ে ওঠা চরে নতুন উদ্যমে চাষ শুরু করেছেন কৃষক আবদুল জোব্বার।

তিনি বলেন, প্রথম দিকে চরের জমিতে শুধু কালাই, চিনা কাউন, বাদাম ও তিলের চাষ করলেও এখন রীতিমতো ভুট্টা ও গমসহ নানা জাতের ফসল আবাদ করছেন। জেগে ওঠা এসব চরের জমির সঠিক পরিসংখ্যান কিংবা তথ্য স্থানীয় কৃষি দফতরে নেই। এমনকি এসব জমির ভোগদখলকারীরাও জানে না তাদের জমিগুলোর সঠিক পরিমাপ ও সীমানা কোথায়।

পাতিলবাড়ী চরের কৃষক মনির হোসেন (৫৫) জানালেন, তার কিশোর বয়সে এসব জমি যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছিল। সেগুলোই চর আকারে জেগে ওঠে আবার আবাদি জমিতে পরিণত হতে পারে তা তিনি কখনো ভাবেননি।

সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাদেকুজ্জামান জানান, সময়মতো সঠিক পরামর্শে চর এলাকার কৃষকরা চাষাবাদে এগিয়ে যাচ্ছে।

এবারে গম চাষে ৬৫০ হেক্টর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোগবালাই কম তাই ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে। রবি ফসল চাষ করায় চরের মানুষের ভাগ্যেরও পরিবর্তন ঘটছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

যমুনার বুকে সবুজ বর্ণ

আপডেট টাইম : ১২:১৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যমুনা নদীতে জেগে উঠেছে অনেক চর। কোন কোন চর স্থায়ী রূপ নিয়েছে। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার যমুনা পাড়ের প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করা মানুষগুলো এ বালুচরেই নানা জাতের ফসল চাষ করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন বোনে। ক্রমেই তারা পাল্টে দিচ্ছে যমুনা পাড়ের চিরচেনা চিত্র। যমুনার বুকে বালুচরেই মাঠের পর মাঠ সেজেছে সবুজ বর্ণে। এ সত্যিই এক কৃষি বিপ্লব।

চরে রবি ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি না ওঠায় চরে চাষিরা স্থায়ী বসতি গড়ে তুলেছে। দুর্গম চরে কিছুদিন আগেও যেখানে মানুষ ছিল না, এখন সেখানে প্রাণের উচ্ছ্বাস। ধু-ধু বালুচর পরিণত হয়েছে আবাদি জমিতে। শ্যালো মেশিন ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে সেচ দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেই বালুচরে চাষ হচ্ছে ভুট্টা, গম, জব, চিনা, কাউন, কালিজিরা, কুমড়া, লাউ, টমেটো, মুলা, আলু, পালংশাক, লালশাক, বেগুন, পেঁয়াজ, মরিচ, শিম, করলা, গাজর, ধনিয়া ও বিভিন্ন ফসল।

গাড়ামারা চরের কৃষক নুরুল ইসলাম জানালেন, তিনি গত বছর এক একর জমি থেকে ১২০ মণ ভুট্টা ঘরে তোলেন। এবারও তিনি ওই জমিতে বাম্পার ফলনের আশা করছেন। প্রায় ৩০ বছর আগে তাদের পূর্বপুরুষের ভেঙে যাওয়া জমিতে গড়ে ওঠা চরে নতুন উদ্যমে চাষ শুরু করেছেন কৃষক আবদুল জোব্বার।

তিনি বলেন, প্রথম দিকে চরের জমিতে শুধু কালাই, চিনা কাউন, বাদাম ও তিলের চাষ করলেও এখন রীতিমতো ভুট্টা ও গমসহ নানা জাতের ফসল আবাদ করছেন। জেগে ওঠা এসব চরের জমির সঠিক পরিসংখ্যান কিংবা তথ্য স্থানীয় কৃষি দফতরে নেই। এমনকি এসব জমির ভোগদখলকারীরাও জানে না তাদের জমিগুলোর সঠিক পরিমাপ ও সীমানা কোথায়।

পাতিলবাড়ী চরের কৃষক মনির হোসেন (৫৫) জানালেন, তার কিশোর বয়সে এসব জমি যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছিল। সেগুলোই চর আকারে জেগে ওঠে আবার আবাদি জমিতে পরিণত হতে পারে তা তিনি কখনো ভাবেননি।

সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাদেকুজ্জামান জানান, সময়মতো সঠিক পরামর্শে চর এলাকার কৃষকরা চাষাবাদে এগিয়ে যাচ্ছে।

এবারে গম চাষে ৬৫০ হেক্টর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোগবালাই কম তাই ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে। রবি ফসল চাষ করায় চরের মানুষের ভাগ্যেরও পরিবর্তন ঘটছে।